রিপোর্টঃ শরীয়তপুর প্রতিনিধি মোঃ ওবায়েদুর রহমান সাইদ। শরীয়তপুর জেলায় ইটের ভাটা মালিকরা ইটের সাইজ ছোট করে ক্রেতাদেরকে ঠকাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আর সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শরীয়তপুর সদর, জাজিরা, গোসাইরহাট, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা এবং নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটা ঘুরে দেখা হয় এবং সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।হিসাব করে দেখা যায়, শরীয়তপুরের ক্রেতারা প্রতি হাজার ইটে কমপক্ষে ২শ ৮৪টি ইট কম পাচ্ছে।শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত শাখা সুত্রে জানা যায়, জেলার ৬টি উপজেলায় ৪৯টি ইটের ভাটা রয়েছে। তার মধ্যে শরীয়তপুর সদর উপজেলায় ২০টি, জাজিরা উপজেলায় ৮টি, নড়িয়া উপজেলায় ৭টি, ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৬টি, ডামুড্যা উপজেলায় ২টি এবং গোসাইরহাট উপজেলায় ৬ টি ইটের ভাটা রয়েছে।সরকারী হিসেব মতে শরীয়তপুর জেলায় ৪৯ ইটের ভাটা থাকলেও বর্তমানে ৩৯ টি ইটের ভাটা চালু রয়েছে। বাকী ১০ টি ইটের ভাটা আর্থিক শুন্যতা, উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বন্ধ রয়েছে।অতি সম্প্রতি শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন ইটের ভাটা ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেকটি ইটের ভাটার ইট তুলনামূলক ভাবে অনেক ছোট। ইটের ভাটায় প্রস্তুতকৃত ইটের সাইজ রয়েছে দৈর্ঘ্যে ২২ সেন্টিমিটার, প্রস্থে ৯ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতায় ৫ সেন্টিমিটার।সরকারী বিধি মোতাবেক প্রতিটি ইটের সাইজ হবে দৈর্ঘ্যে ২৪ সেন্টিমিটার, প্রস্থে ১১ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতায় ৭ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ প্রত্যেকটি ইটে কমপক্ষে ২ সেন্টিমিটার কম রয়েছে।ইটের আকার ছোট হওয়ার কারণে একজন ক্রেতা প্রতি হাজার ইটে ২শ ৮৪টি ইট কম পাচ্ছেন। তা সাথে নতুন যোগ হচ্ছে শরীয়তপুর বিভিন্ন একালায় ঘুড়ে দেখা গেছে কিছু অসাধু ইট ব্যবসায়ী কুশটিয়া হতে ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে আকারে ছোট ও নিম্ম মানে ইট কম দামে বিক্রি হচ্ছে, তার দৈঘ্য ২০ সেন্টিমিটার, প্রস্থ্য ৯ সেন্টিমিটার, উচ্চতা ৫ সেন্টিমিটার। এই গুলো নড়িয়া উপজেলার ফতেজঙ্গপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তায় ও ভোজেশ্বর ইউনিয়নের উপসী ও মাশুরা রাস্তার পাশে দেখা গেছে, আমি এক ব্যবসায়ীর কাছে জিজ্ঞেস করলাম এই ইট গুলো কোথায় হতে এসেছে সে বলে কুশটিয়া হতে আনা হচ্ছে, এইগুলোর দাম কম ও আকার ছোট, গ্রহক যেটা নেয়, আমার প্রশ্ন হলে এই নিম্ম মানে ইট তৈয়ারী হচ্ছে কোথায় এবং কোন ইট ভাটায় তৈরায়ী হচ্ছে, আর এই কম পোড়া ছোট ইটগুলো সরকারী কাজে বেশী ব্যবহার হচ্ছে। শরীয়তপুর তো গ্রহক ঠকানো হচ্ছে তার সাথে এই কুশটিয়ার আরে ছোট ইট যোগ হচ্ছে। এই অনীয়ম শরীয়তপুরের ইট ভাটা মালিকরা বছরের পর বছর ধরে এই ভাবে ইট কম দিয়ে ক্রেতাদেরকে ঠকিয়ে আসছেন।শুধু তাই নয়, গোসাইরহাট উপজেলার লাবন কাঠি গ্রামে অবস্থিত একতা ব্রিক ফিল্ডে কয়লার পরিবর্তে কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছেন। যার ফলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বনজ সম্পদ।এদিকে, ক্রেতাদের নিয়ম মাফিক ইট পাওয়ার ক্ষেত্রে ইট ভাটায় যাদের তদারকি করার কথা সেই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।এ ব্যাপারে ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল জলিল খান বলেন, আগে ইট বানানোর ফর্মা যে সাইজের ছিলো এখন তার চাইতে একটু বড় ফর্মা দিয়ে ইট বানানো হচ্ছে। যাতে ইট পোড়ানোর পর ছোট হয়ে না যায়। এবার ইট সরকারী সাইজ মতোই বানানো হচ্ছে।
Leave a Reply