বান্দরবান প্রতিনিধি:-উদ্দেশ্য প্রণোদিত ঘটনা বিহীন একটি মিথ্যা মামলায় হাজতবাস করছেন বান্দরবানজেলাধীন আলীকদম উপজেলার ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ জয়নাল আবেদীন।
চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের পরিবারের দাবি, মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানের স্ত্রী সুইটি বলেন, জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে এটা সত্য। তবে চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিহিংসা পরায়ন একটি মহল কোন ধরনের ঘটনা ছাড়াই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে আমার স্বামী শশুরসহ তাদের পরিবারকে।
গত ০৮-৫-২০২৩ইং তারিখে ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডস্থ শিবাতলী কালু কারবারি পাড়ার নবাগত বাসিন্দা মোঃ আবু ছৈয়দের ছেলে মোঃ ওমর ফারুক কর্তৃক বান্দরবান জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-০২ এ একটি (সিআর) পরবর্তীতে (জিআর) মামলায় আসামী হয়েছেন চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন এবং তার পিতা বৃহত্তর চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ নুরুল কবির ও তার পরিবারের অন্য তিন সদস্যসহ মোট ১৯ জন ব্যক্তি।
বাদী ওমর ফারুকের করা মামলায় সাক্ষী এবং স্থানীয়দের দেয়া বক্তব্যে জানা যায়, উক্ত মামলায় উল্লেখিত ঘটনার কোন প্রকার সত্যতা নেই।
এজাহারকৃত মামলার বাদী ওমর ফারুকের পক্ষের ৯নং সাক্ষী সাবেক সেনা সদস্য বর্তমান ভিডিপি ইউনিয়ন দলনেতা মোঃ মকবুল হোসেন স্ব প্রনোদিত হয়ে এই প্রতিবেদক কে বলেন, উক্ত মামলায় উল্লেখিত মারামারির ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত, বাদীর নিজের পরিবারের সদস্যরা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের সততা এবং তার পরিবারের সুনামে ঈর্ষান্বিত হয়ে কারো প্ররোচনায় এই ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলাটি দায়ের করছেন বলে মনে করছি।
তিনি বলেন, যে জমিটি নিজেদের দাবী করে মারামারির মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে বাদী ওমর ফারুক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের পরিবারের সদস্য এবং তাদের চাষীদের আসামী করে মামলাটি দায়ের করেছেন উক্ত জায়গা-জমি বিগত ৪০বছরেরও বেশি সময় ধরে (বর্তমানে চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের পিতা নুরুল কবিরের নামে সরকারি নথিভুক্ত) ভোগ দখল করছেন চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের দাদা মৃত মোজাহের আহম্মদ এর ওয়ারিশগন। উক্ত ভিটায় চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের দাদা-দাদী মৃত্যুবরণ করেন। এবং উক্ত মামলার আলীকদম থানার পুলিশ তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দেলোয়ার হোসেন মামলার সাক্ষী হিসেবে আমার কাছে ঘটনার বর্ননা এবং ঘটনার সময় আমার উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে, মামলায় উল্লেখিত কোন ঘটনা ঘটেনি এবং মামলায় উল্লেখিত আসামিদের কেউই ঘটনাস্থল এলাকায় উপস্থিত ছিলেন না বলে আমি জানিয়ে দিই।
বাদী পক্ষের ১০নং সাক্ষী ড্রাইভার মোস্তফা মুঠোফোনে এই প্রতিবেদক কে জানান, বাদীপক্ষের উল্লেখিত তথাকথিত আহত ব্যাক্তিরা হাসপাতালে নেয়ার সময় আমার গাড়িতে থাকা কালীন তেমন গুরুতর কিছু আমার নজরে পড়েনি। আমার মনে হয়, কেউ উদ্দেশ্যমূলক ভাবে নাটক সাজিয়ে চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন এবং তার পরিবারের সদস্যদের মানহানি করার উদ্দেশ্যে এই মামলাটি দায়ের করেছেন, গাড়িতে থাকাকালীন তাদের আলোচনায় এমন ইঙ্গিত পাই।
এই ঘটনায় গত ৮ মে ওমর ফারুক বাদী হয়ে চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের বর্গাচাষীসহ ১৯ জনকে আসামি করে বান্দরবান জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর ১৯ আসামীর মধ্যে ১৪জন গত ২৩/০৫/২০২৩ইং তারিখে বান্দরবান জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হতে জামিন পান, চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনসহ বাকি ৫ আসামীকে গত ৩১ মে হাইকোর্ট ৬সপ্তাহের মধ্যে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। আসামিরা ৫ জুলাই বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করলে, আদালত ১২ জুলাই শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এবং ওইদিন তাদের জামিন না মঞ্জুর করে ৫জনকে জেল হাজতে পাঠান আদালত।
উক্ত মামলার ঘটনা সম্পর্কে ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং মামলার বাদীর নিকটতম আত্মীয় মোঃ ইউসুফ আলী বলেন, মামলায় উল্লেখিত ১৯ জন আসামির কেউই ঘটনাস্থলের আশ-পাশে ছিলেন না, এবং অত্র এলাকায় মারামারির কোনো ঘটনাই ঘটেনি, কারো উস্কানিতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।
মামলার ঘটনার আদ্যোপান্তে জানা যায়, বাদীপক্ষের সাক্ষীদের মধ্যে ২নং সাক্ষী তারেকুল ইসলাম বাদীর ভাই, ৩নং সাক্ষী জাহেদুল ইসলাম বাদীর নিকটআত্মীয়, ৪নং সাক্ষী মনোয়ারা বেগম বাদীর শাশুড়ী, ৫নং সাক্ষী আবু সৈয়দ বাদীর পিতা, ৬নং সাক্ষী জোহরা বেগম বাদীর মা, ৭নং সাক্ষী আরিফ মিয়া ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারেনি, ৮নং সাক্ষী বাদীর দূরসম্পর্কের আত্মীয় মোঃ ছৈয়দ আলম ঘটনার আগেরদিন হতে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থান করছিলেন বলে জানান তিনি।
Leave a Reply