মো: হৃদয় শেখ ,বিশেষ প্রতিনিধি :
আমরা সবাই জানি শাবান মাস শেষ হলে রমজান মাস শুরু হয়। শাবান মাসের ঠিক শেষ দিনে মাগরিবের নামাজ পড়ে আমরা সবাই চাঁদ দেখার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়। সবার মুখে একই কথা থাকে আমরা চাঁদ দেখবো এবং চাঁদের মাধ্যমে আমাদের রোজা হবে কিনা সেটা আমরা বুঝতে পারবো। যদিও আমরা সৌদি আরবের চাঁদ দেখার পরে অনেকটা নির্ভরশীল। আমি এটা বলছি এই কারণে, সৌদি আরবে যেদিন চাঁদ দেখা যাবে ঠিক তার পরের দিন আমাদের দেশে রোজা রাখা হয়। আবার আমাদের দেশে কোন কোন জেলায় তারা সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে রোজা রাখেন। বর্তমান সময়ের থেকে অতীতকালের মানুষ রোজার সময় খুবই মজা এবং আনন্দ পেত। সবার মধ্যে একটা উল্লাস দেখা যেত। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের সেই আনন্দ গুলো এখন হারিয়ে গেছে। সেই সময় মানুষ নামাজ শেষ করে সবাই আকাশের দিকে চেয়ে থাকতো যে তারা চাঁদ দেখবে বলে। কিন্তু এখন মানুষ নামাজ শেষ করে টিভির সামনে বসে যায়, চাঁদ দেখা গেছে কিনা সেটা খবরের মাধ্যমে জানতে চাই। আর এর ফলে মানুষের মধ্যে আনন্দটা বিলীন হয়ে গেছে।
যাহোক গতকাল যখন আমরা মাগরিবে নামাজ শেষ করে আসি এরপর আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি চাঁদ দেখা যাচ্ছে। আমরা যদি কয়েক যুগ আগে পিছিয়ে যায় তাহলে আমরা দেখতে পারি, ওই সময় আকাশের চাঁদ দেখা যেত অনেকটা কাঁচির মতো বাঁকানো এবং এমনই চিকন। আমরা নামাজ শেষ করে দশ মিনিট থেকে পনেরো মিনিট না যেতে চাঁদ ডুবে যেত। কিন্তু এবার আমরা যা দেখলাম তা পুরোটাই ব্যতিক্রম। এবারে চাঁদটা ছিল অনেকটা বড়। এবং এটা দেখে সবাই বলাবলি করছে এবার রোজা হয়তোবা ৩০ টা সম্পূর্ণ নাও হতে পারে। তারপরও মহান আল্লাহর ইচ্ছা তিনি যদি চান তাহলে অবশ্যই পূর্ণ হবে।
রোজার প্রথমে থেকেই মানুষের মধ্যে চাঁদ নিয়ে একটু আলোচনা চলছেই। ঠিক রোজার প্রথম দিনেই ঘটে গেল আরেক ঘটনা। আজকে আমি যখন মাগরিবের নামাজ শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা হচ্ছিলাম ঠিক সেই সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম একটি তারা চাঁদের ঠিক নিচের দিকে লেগে আছে। আমি প্রথমত দেখে তো অবাক। আমার বয়সে আমি এরকম ভাবে চাঁদ এবং তারা একত্রে থাকাটা কখনো দেখিনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যে অনেকেই এক জায়গায় জড়ো হয়ে গেল। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তোবা এমন হতেও পারে কিন্তু সবাই যখন একত্রিত হওয়ার পরে, যারা অনেক বয়স্ক লোক ছিল তারাও একই কথা বলে, তাদের জীবনেও তারা নাকি এভাবে চন্দ্র এবং তারা একত্রিত হতে দেখেনি। পৃথিবীর বয়স অনেক খানিক হয়ে গেছে। তাই সবাই বলাবলি করে তাহলে কি পৃথিবী শেষের দিকে। অর্থাৎ রোজ কিয়ামত কি সামনে চলে এসেছে। চাঁদ এবং তারার একত্রিত দেখে মানুষ সবাই একটু হতভম্ভ হয়ে গেছে। প্রতিটা মানুষের মধ্যে এই চন্দ্র এবং তারা নিয়ে আলোচনা চলছে এখন।
যদি আমরা হাদিস এবং কোরআন নিয়ে কথা বলে থাকি। অর্থাৎ হাদিস এবং কোরআনে আছে কি সেই সম্পর্কে যদি আমরা জানার চেষ্টা করি তাহলে আমরা জানতে পারি যে, নবী করীম সাঃ বলেছেন, আমার সাথে কেয়ামত সম্পর্কিত। অর্থাৎ নবী করীম সাঃ যেদিন জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঠিক সেদিন কেয়ামতের প্রথম আলামত ঘটেছিল। একটা সময় নবী করীম সাঃ বলেছেন দুইটা আঙ্গুল একত্রিত করলে একটি আঙ্গুল এবং অপরটি আঙ্গুলের খাড়া যে ফাঁকা জায়গা থাকে এতোটুক সময় রয়েছে কেয়ামতের। আর যখন কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার সময় আসবে তখন পৃথিবীতে যেটা কখনো মানুষ দেখিনি কখনো শুনিনি এমন কিছু অসম্ভব ঘটনা গুলো ঘটে থাকবে। যদিও কিয়ামতের অনেক গুলো ছোট এবং বড় আলামত ঘটে গেছে। আর এই সূত্র ধরে মানুষের মধ্যে এই কথাই চলছে যে, তাহলে কি এটাও কি কিয়ামতের একটি আলামত? হয়তো পৃথিবীতে কেয়ামত সংঘটিত হতে অনেক দেরি আছে কিন্তু তার আলামত গুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ পাচ্ছে।
বর্তমান সময়ে যাই ঘটুক না কেন আমাদেরকে আল্লাহর উপরে বিশ্বাস এবং আস্থা রাখতে হবে। আমাদেরকে মনে মনে ভাবতে হবে যে এসব নিদর্শন গুলো আমাদেরকে দেখাচ্ছে যে পরম করুনাময় আল্লাহ তাআলা তিনি হলেন সর্বশক্তিমান। আমাদের বোঝাতে চাচ্ছেন আমরা পাপের কাজ গুলো যেন ছেড়ে দিয়ে তার পথে পাড়ি দেয়। আমাদেরকে সাবধান হওয়ার জন্যই মনে হয় এই ধরনের নিদর্শন গুলো আমাদেরকে দেখানো হচ্ছে। এগুলো দেখার পরে আমার অনুভূতিতে মনে হচ্ছে যেন এই রমজান মাসে আমরা অনেক কিছু দেখব। আমাদের জন্য অনেক কিছুই যেন অপেক্ষা করছে। সবকিছুতে আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখবো। আল্লাহ সুবাহানাতালা যেন আমাদেরকে সেই হেকমত এবং যে কাজ গুলো আমাদেরকে নিষেধ করেছেন এবং যে কাজ গুলো করতে বলেছেন সেগুলো যেন আমরা করতে পারি। সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা ও সালাম আসসালামু আলাইকুম।
Leave a Reply