জাকারিয়া হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি হোটেলে ঢুকে মব তৈরি করে ভয়-ভীতি প্রদর্শনপূর্বক ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও চাঁদা না দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক জাতীয় দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন এর উপজেলা প্রতিনিধি ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন মঠবাড়িয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মর্তুজা হোসাইন (৩২) এবং ওই শাখার প্রচার সম্পাদক সুমী বেগম (৩৩)কে হেনস্থা সহ মব সৃষ্টির অভিযোগে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) মঠবাড়িয়া পৌর ৩ নং ওয়ার্ডের দেলোয়ারের পুত্র ও মঠবাড়িয়া পৌর যুবদলের সদস্য বেল্লাল(৪২) এবং পূর্ব রাজপাড়া গ্রামের মৃত লতিফ দফাদারের কন্যা রানী বেগমের পুত্র, চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য ইমন (৩৫) সহ আরো ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিবাদী পক্ষের একটি মহল কর্তৃক ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ও ভিডিও বানিয়ে প্রচারের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি)করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন রাত ০৯:৪০ ঘটিকার দিকে এজাহার নামীয় আসামিরা সহ ১০-১২ জন সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মিলে বে-আইনী জনতাবদ্ধে মর্তুজা হোসাইন ও সুমি বেগমের যৌথ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অনধিকার প্রবেশ করে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিবাদীরা মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয়। তখন বিবাদীদের সাথে বাদী সুমী বেগম ও ১নং সাক্ষী মর্তুজা হোসাইনেরর কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হইয়া তাদেরকে এলোপাথারী ভাবে কিল, ঘুষি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে এবং বাদীর শ্লীলতাহানি ঘটায়।
এদিকে ঘটনার পর সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে এজাহার নামীয় আসামিগণ কর্তৃক বাদী ও সাক্ষীদের কাছে চাঁদা দাবি ও মারধরের প্রমাণ পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থানের পর মঠবাড়িয়া পৌর যুবদলের সদস্য বেল্লাল ও একটি চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য ইমন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, মব সৃষ্টি ও মারামারির সাথে জড়িত হয়ে ইতিপূর্বে একাধিক চাঁদাবাজি মামলার আসামি হন। ইমন দেশের বিভিন্ন স্থানে একটি সক্রিয় চোর চক্রের সদস্য হিসেবে চুরি ডাকাতির সাথে যুক্ত থাকার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। গত চার বছর আগে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় নগরীর শতাধিক বাসায় কোটি কোটি টাকা ও মালামাল চুরির দায়ে গ্রেপ্তার হয়ে তিনি এসব চুরির কথা স্বীকার করেন। ইমনের চুরির বিষয়ে সময় টিভি ও ডিবিসি সহ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অধিকাংশ টেলিভিশনে ইতিপূর্বে সুস্পষ্ট তথ্য নির্ভর একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে সুমি বেগম বলেন, আমি ও মর্তুজা ভাই দুই মাস আগে পৌর শহরস্থ টাওয়ার রোডের ওয়াজেদ আলীর পুত্র সগির হোসেনের নিকট থেকে তার নিজ বাসার নিচতলা বাৎসরিক চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে ‘হোটেল মঠবাড়িয়া’ নামক একটি খাবার হোটেল স্থাপন করি। এরপর থেকেই ছগিরের বিভিন্ন কর্মকান্ডে আমাদের সন্দেহ ছিল একপর্যায়ে তিনি আমাকে কুপ্রস্তাব সহ নানা অনৈতিক বিষয়ে প্ররোচিত করতে থাকে এতে করে আমরা তাকে একদিন স্পষ্টভাবে সাবধান করে দেই। সেই থেকে তিনি আমাদের সাথে শত্রুতা করে আসছেন, এছাড়াও ঘটনার পর থেকে আমাদের হোটেল ও ছগিরের বাসার আশপাশে তাদের নিজস্ব লোকজন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা প্রচার করে আসছেন। যেহেতু বিবাদীরা তাদের একই রাজনৈতিক গ্রুপের লোক, ওইদিন মূলত তার ইন্দনেই বেল্লাল ও ইমন চক্রান্তমূলক ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। এছাড়াও বেল্লাল, ইমন ও ছগির সহ একটি সুস্পষ্ট কুচক্রি মহল বেশ কয়েকটি ফেক আইডি থেকে আমাদেরকে সামাজিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। এ বিষয়ে আমি ঘটনার দিনই মঠবাড়িয়া থানায় এজাহার দায়ের করি কিন্তু পুলিশ কর্তৃক অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে ৬ এপ্রিল মামলাটি গ্রহণ করেন। এছাড়াও একই দিনে আমি মঠবাড়িয়া থানায় মিথ্যা, চক্রান্ত মুলক তথ্য ছড়ানো মহলের বিরুদ্ধে একটি জিডি দায়ের করেছি।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে সুমি বেগম বাদী হয়ে একটি জিডি ও একটি মামলা দায়ের করেছেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা যায়।
Leave a Reply