1. admin@bijoy52tv.com : bijoy52tv :
শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৩ অপরাহ্ন

ঠাকুরগাঁওয়ে বিলে -ঝিলে প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধন করছেন কচুরিপানা

বিজয় ৫২ টিভি
  • আপডেট সময়ঃ রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২
  • ৬৯ জন দেখেছেন

মিলন আক্তার,ঠাঁকুরগাও জেলা প্রতিনিধি:-গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত সাধারণ একটি জলজ উদ্ভিদের নাম “কচুরিপানা”। ঠাকুরগাঁও সহ বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক এলাকায় হাওর-বাঁওড়-খাল-বিল আর শস্য-শ্যামল সবুজে ভরপুর ছোট বড় হাওর, বিল, ঝিল ও বাড়ির পাশের ডোবায় এখন ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন কচুরিপানা ফুল । এটি একটি বহু-বর্ষজীবী ভাসমান জলজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Eichhornia crassipes। বাংলাদেশে বিল-ঝিল-হাওর-বাঁওড়ে বিভিন্ন জাতের বিভিন্ন রঙের ফুল ফোটে বিভিন্ন ঋতুতে।

এ সবের মধ্যে  সৌন্দর্য বর্ধক, দৃষ্টিনন্দন, উপকারী কচুরিপানা বিভিন্ন নদী-নালা-খাল বিল, পুকুর, ডোবায় ও জলাশয়ে ফুটে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দেয় এবং জৈব সার তৈরিতে সাহায্য করে। কচুরিপানা ও তার ফুল জনপ্রিয় না হলেও বিভিন্ন সময়ে মাছ, গবাদিপশুর খাদ্য ও জৈব সার হিসেবে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। সৌন্দর্যের পাপড়ি মেলে ধরা কচুরিফুলের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই তুলছেন। ছবির ক্যানভাসে একই ফ্রেমে আবদ্ধ হচ্ছেন তরুণ-তরুণিরা। খাল- বিল ও জলাশয়ে ফুল ফুটে সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে । ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা জলাশয় থেকে শিশির ভেজা কচুরিপানার ফুল তুলে খেলা করে। গ্রামের মেয়েরা এ ফুল খোপায় বাঁধে।

ঠাকুরগাঁও  জেলার বিভিন্নস্থানের ছোট বড় খাল-বিল বাড়ির পার্শ্বের পুকুর ডোবা-নালায় এখন ফুটেছে সৌন্দর্যবর্ধক দৃষ্টিনন্দন কচুরি পানার ফুল। তারই ধারাবাহিকতায় জেলায় পড়ন্ত বিকেলে বিলের ধারের পাশের রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে এমনই ফুলের দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। আবার এই ফুলে অনেকে আকৃষ্ট হয়ে প্রকৃতির এই অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করেন। এছাড়া মাটির শক্তি যোগাতে ভূমিকা রাখছে কচুরিপানা। কৃষকদের কচুরিপানা থেকে জৈবসার উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দিলে জৈবসার ব্যবহারে যেমন কৃষক উপকৃত হবে অপরদিকে বিদেশের রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। সেইসাথে কচুরিপানা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

শুষ্ক মৌসুমে কচুরিপানার গাছ তুলে স্তূপ করে রাখলে তা শুকিয়ে গিয়ে জৈব সার তৈরি হয়। কৃষি জমির জন্য এ সার খুব উপকারী। আগেকার দিনে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে মাঠের পটল, আলু, লাউ, ইত্যাদির ক্ষেতে শুকনা কচুরিপানা বিছিয়ে দেয়া হতো। এতে একদিকে যেমন এসব সবজি পচনের হাত থেকে রক্ষা পেত অপরদিকে এসব শুকনা কচুরিপানার গাছ পচে জমিতে জৈবসার হিসাবে কাজ করত। আগের মতো এলাকায় আর কচুরিপানা না থাকায় বর্তমানে সুতা ও বাঁশের তৈরি মাচায় এসব সবজি চাষ করা হয়। নানা গুণের কচুরিপানা বর্তমানে আর তেমন আগের মতো দেখাই যায় না। সবুজ পাতার মাঝে বেগুনি সাদা আর হলুদের মিশ্রণে ফুটে থাকা হাজার হাজার ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য এখন খুবই বিরল।

নান্দনিক সৌন্দর্য় উপভোগ করতে আসা অনেকে বলেন, কচুরিপানার ফুলের যে এমন সৌন্দর্য থাকে তা চোখে না দেখলে হয় তো জানাই হতো না। বাড়ির পাশে এমন অপরূপ শোভা চিত্তবিনোদনে খুলে দেয় আনন্দের দুয়ার। বিকেল হলেই আমরা বেরিয়ে পড়ি সৌন্দর্যের খোঁজে। বিলের মধ্যে ফুটে থাকা এমন সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়।

ঠাকুরগাঁও জেলার প্রকৃতি প্রেমিক মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতি বছর বর্ষার পানিতে বিলের চারপাশ কচুরিপানায় ভরে যায়।এখন মুক্ত জলাশয়ে ফুটন্ত কচুরিপানা ফুল প্রকৃতিতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। এ অরূপ সৌন্দর্য মনকে মাতিয়ে যাচ্ছে। উষ্ণতা বয়ে আনছে প্রকৃতিপ্রেমিদের হৃদয়ে।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে  , কচুরিপানা খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করে। কচুরিপানা আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিকর মনে হলেও কৃষিক্ষেত্রে এর যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে।অনেক জায়গায় কৃষকেরা কচুরিপানা উঠিয়ে জমিতে ফলানো আলু, পটলসহ বিভিন্ন সবজি চাষে ব্যবহার করে থাকে। কচুরিপানা থেকে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। ফলে কৃষক ফসল উৎপাদনে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। কৃষি বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরি করতে সময় লাগে ৭০ দিন কিন্তু কচুরিপানা থেকে সময় লাগে ৫৫ দিন।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো খবর পড়ুন
© All rights reserved © 2025
Developer By Zorex Zira