রিয়াজ উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার(চট্রগ্রাম):-গতকাল ১৯ শে নভেম্বর রোজ শনিবার চট্টগ্রামের পটিয়ার কাশিয়াইশ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম (কাশেম চেয়ারম্যান) ছোট ভাই সোহেলকে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে খুনের সাথে জড়িত জামায়াত নেতা ‘কাইছ’সহ সকল খুনী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) পটিয়ার ৮ নং কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাজনৈতিক নেতৃত্ববৃন্দসহ সাধারন গ্রামবাসীরা এই মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।
এসময় উপস্থিত গ্রামবাসীরা বলেন, আমরা সোহেলের হত্যাকারী জামায়াতের অনুসারী সন্ত্রাসী কাইছসহ এর সাথে জড়িত সকলের ফাঁসি চাই, নাহলে আমরা প্রয়োজনে শহরে গিয়ে আন্দোলন করবো। নিরীহ সোহেল কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নয়,কোনো অপরাধের সাথে জড়িত নয়, তিনি সবসময় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সহায়তায় এগিয়ে আসতেন।এখানে শুধু তাকে হত্যা করা হয়নি এই দেশের মানবতাকে হত্যা করা হয়েছে।
তারা আরো বলেন, করোনা মহামারীর সময় যখন কেউই জনগনের সহায়তায় এগিয়ে আসতো না তখন নিহত সোহেল মানবতার সেবায় নিঃস্বার্থে এগিয়ে এসেছিল। নিজের আয় থেকেই অসহায়দের সহায়তা করতে দেখেছিলাম।এই লোকটাকে বিনা কারনে যারা হত্যা করেছে তাদের বাঁচার কোনো অধিকার থাকতে পারেনা।
তারা বলেন, কাশেম চেয়ারম্যানের মাদক, সন্ত্রাস ও অপরাধ নির্মূলের জনপ্রিয়তায় কাইছসহ তার বাহিনী অত্র এলাকায় কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারতো না। এটাই এই পরিবারের অপরাধ। কাশেম চেয়ারম্যান কোন দিন কোন অপরাধীদের লালন পালন করতো না। এছাড়াও কায়েছ গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কাসেম চেয়ারম্যানের বিপক্ষে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে হেরে এলাকার সকলকে তার শত্রু মনে করতে থাকে। রাস্তাঘাটে যখন তখন যাকে তাকে গালমন্দ ও হত্যার হুমকি দিয়ে থাকতে।
এসময় সেখানে উপস্থিত নিহত সোহেল’র ভাই ইলিয়াস জসিম কান্না বিতরিত কন্ঠে তার ভাইকে স্মরন করে প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের ছোট ভাই সোহেল শুধু আমাদের পরিবার নয় অত্র ইউনিয়নের সকলের চোখের মনি। সে রাজনীতির সাথে কোনদিন জড়িত ছিলনা। আমার বড় ভাই কাশেম চেয়ারম্যান ৬ বার এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্বপালন করে আসছে কিন্তু আমার ভাই কোন দিন এই দিকে পা দেয়নি, কোন দিন আমার বড় ভাইয়ের জন্য কারো কাছে ভোট চেয়েছে এমন নজির নেই। তাহলে কেন সন্ত্রাসী কায়েস আমার ছোট ভাইকে খুন করলো? আমরা এর জবাব টা চাই এই খুনীদের কাছ থেকে!
তিনি আরো বলেন, খুনী কাইছ গ্রেফতারের আগ থেকেি আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। গ্রেফতার হওয়ার পর আমার ভাই কাশেম চেয়ারম্যানকে বের হয়ে খুন করবে বলে হুমকি দিয়েছে। আমরা এখনো তাদের আতংকের সাথে রাত কাটাচ্ছি। আমরা চাই সোহেলের খুনের সাথে জড়িত সকল আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারসহ তাদের ফাঁসি চাই আমরা।
গত এপ্রিলের ২৩ তারিখ পটিয়া ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসী ও খুনী কাইছ নির্বাচনে হারার জের ধরে তিব্রক্ষোভে নিহত সোহেলকে রমজানের তারারির নামাযের পর একা পেয়ে প্রকাশ্যে বাজারে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের ৬ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছোট ভাই ও চট্টগ্রামের বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠী কেডিএস এর চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ভাগ্নে মো. সোহেলকে নির্মমভাবে খুন করেন।
সে সময় কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বাদী হয়ে ৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা আদায় করেন। মামলার প্রধান আসামি মোঃ কাইছ কে গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সীতাকুন্ড থানাধীন সিটি গেইট এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর আগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই খুনের সাতে জড়িত এজাহার ভুক্ত আরো ৩ আসামী অভিযুক্ত মোহাম্মদ শরীফ সহ তার পিতা মো. মুনছুর ও একই এলাকার নুরুল আবছারের ছেলে জনিকে গ্রেপ্তার করেন।
এখনো এই মামলার পলাতক ২ জন আসামী পলাতক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
Leave a Reply