মোঃরজিবুল ইসলাম,বিভাগীয় প্রধান খুলনা :-যশোর শহরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) জনসভা করেছে আওয়ামী লীগ। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে আধঘণ্টার বেশি সময় বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন,
আপনারা এসেছেন এবং আমাকে আপনাদের সামনে দু’কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন আমি কৃতজ্ঞ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আপনারা এখানে নৌকার সব প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন এ জন্য আপনাদের প্রতি জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে যে সংগ্রাম তিনি শুরু করেছিলেন,সেই সংগ্রামে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় এনেছিল।যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথের বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে,সেই সময় এলো চরম আঘাত,পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট।তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি,সেদিন আমার মা,ভাই কামাল,জামাল,রাসেলসহ আমাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে। আমি আজকের দিনে তাদের জন্য দোয়া চাই।বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। সব হারানোর বেদনা নিয়ে আপনাদের কাছে এসেছিলাম, বাংলার মানুষের ভাগ্য গড়তে।
স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বাংলাদেশের একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না।তিনি নোয়াখালীর চর এলাকা দিয়ে গুচ্ছগ্রাম শুরু করেছিলেন।তিনি কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। আমি ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম,একটা মানুষও কুঁড়েঘরে বাস করবে না।টিনের একটা ঘর দিলেও দেবো।আমরা ব্যারাক হাউজ নির্মাণ করে টিনের ঘর দিয়েছি।এবার আমরা সব এলাকায় তালিকা করে বিনা পয়সায় ভূমিহীনদের ঘর দিয়েছি।প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ এই ঘর পেয়েছে।এই বাংলাদেশে কোনও মানুষ ঠিকানাবিহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।
এই বাংলাদেশকে খালেদা জিয়া সরকার যেভাবে রেখে গিয়েছিল, তখন প্রায় ৪০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করতো। আমরা ২০ ভাগে নামিয়েছি। হতদরিদ্র ছিল ২৫ ভাগ,আমরা সেটা ১০ ভাগে নামিয়ে এনেছি।কেন? আমরা মানুষের কথা চিন্তা করেছি। করোনার সময় আমরা সব ধরনের মানুষকে সহায়তা করেছি।এমনকি যেসব স্কুল এমপিওভুক্ত না সেসব স্কুলের শিক্ষকদের জন্যও টাকা পাঠিয়েছি।ইমাম-মোয়াজ্জিন থেকে শুরু করে যন্ত্রশিল্পীদের জন্যও টাকা পাঠিয়েছি।গ্রামে গ্রামে টাকা পাঠিয়েছি।মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করি।গত ১৪ বছরে আমরা ৯ হাজার ৩১৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক করে দিয়েছি।যার মধ্যে চার হাজার ৩৯৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক।দুই হাজার ৫৫৮ কিলোমিটার ব্রিজ করেছি।একটা সরকারের পক্ষে যা সম্ভব আমরা তা করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে,এই অঞ্চলটা আরও উন্নত হোক।
গুজবে কখনও কান দেবেন না। বিএনপির কাজই হলো গুঞ্জন ছড়ানো।ওরা তো নিজেরা কিছু করতে পারে না।ক্ষমতায় যখনই এসেছে লুটপাট করে খেয়েছে। ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি, বিএনপি সরকার রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ২০০৯ সালে যখন সরকারে এলাম তখন রিজার্ভ পাঁচ বিলিয়ন ছিল।করোনার সময়ে আমাদের আমদানি-রফতানি ছিল না, সে জন্য আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন হয়েছিল।এরপর যা কেনা দরকার আমরা জনগণের জন্য দুই হাতে খরচ করেছি।রিজার্ভ অন্য কোথাও যায়নি, এটা জনগণের কল্যাণে ব্যয় হয়েছে।আট বিলিয়ন আমরা বিভিন্ন কাজের বিনিয়োগ করছি।রফতানি, কৃষিতে প্রণোদনা দিচ্ছি।
আমি জানি,যশোর স্টেডিয়াম জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় আছে।এই স্টেডিয়ামের সার্বিক উন্নয়নে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা এটির উন্নয়ন করবো।খেলাধুলা আমরা চাই। প্রত্যেকটি উপজেলায় আমরা মিনি স্টেডিয়াম করে দিচ্ছি।আমাদের মাথাপিছু আয় ২৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।খালেদা জিয়ার সময় ছিল মাত্র ৩৫৩ মার্কিন ডলার।এরা (বিএনপি) কার কাছে প্রশ্ন করে? খুন, হত্যা, জেল, জুলুম, মামলা ছাড়া তারা কিছুই দিতে পারেনি।
এটুকুই বলবো,আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদেরকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই,আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন ভোট দেবেন কিনা। আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
Leave a Reply